আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
টানা পঞ্চম দিনের মতো ইসরায়েল ও ইরান একে অপরের ওপর হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) উভয় পক্ষই তাদের আক্রমণ আরও বিস্তৃত করেছে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানিদের অবিলম্বে তেহরান ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রাম্পের এই হঠাৎ হুঁশিয়ারি আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। ব্রিটিশ বাতা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলে মধ্যরাতের পরে তেল আবিবে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে এবং ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আবারও দেশটিকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইরানি কর্মকর্তারা পাঁচ দিনে ২২৪ জন নিহতের খবর জানিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের ২৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বলেছেন, ইরানের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির কারণে প্রায় ৩ হাজার ইসরায়েলিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ইরানি গণমাধ্যম মঙ্গলবার ভোরে তেহরানে বিস্ফোরণ এবং ভারী বিমান প্রতিরক্ষা গুলিবর্ষণের খবর দিয়েছে। আসিরান নিউজ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, ৩২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা নাতানজেও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, সবাইকে এখনই তেহরান ত্যাগ করতে হবে। তবে এই হুঁশিয়ারির পেছনে নির্দিষ্ট কোনও কারণ উল্লেখ করেননি তিনি।
পোস্টে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘ইরান আমার প্রস্তাবিত চুক্তি মেনে নিলে আজকের প্রাণহানি এড়ানো যেত। এটা দুঃখজনক ও অনর্থক প্রাণহানি। পরিষ্কার করে বলছি—ইরান পারমাণবিক অস্ত্র গ্রহণ করতে পারে না। আমি বারবার এটা বলেছি!’
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির কারণে ট্রাম্প সোমবার কানাডায় গ্রুপ অফ সেভেন-জি৭ শীর্ষ সম্মেলন থেকে একদিন আগে বেরিয়ে যান।
হোয়াইট হাউজের একজন সহকারী বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানে আক্রমণ করছে তা সত্য নয়। প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ ফক্স নিউজকে বলেছেন যে ট্রাম্প এখনও ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছেন।
দুটি ইরানি এবং তিনটি আঞ্চলিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে যে, তেহরান ওমান, কাতার এবং সৌদি আরবকে অনুরোধ করেছে যে, তারা ট্রাম্পকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করুক। এর বিনিময়ে ইরান পারমাণবিক আলোচনায় নমনীয়তা দেখাবে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ‘ট্রাম্প যদি কূটনীতিতে আন্তরিক হন এবং এই যুদ্ধ বন্ধ করতে আগ্রহী হন, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো ফলপ্রসূ হবে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে অবশ্যই তার আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এবং আমাদের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসন সম্পূর্ণ বন্ধ না করা হলে, আমাদের প্রতিক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।’