জিয়ারুল ইসলাম জিহাদ :
খাবারের মেনু কার্ডের দাম-ই ৮৩ হাজার পাউন্ড যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। আর মেনু কার্ডের এমন দাম শুনে চমকে যাবার কিছু নেই কারণ এটি কোন সাধারণ মেনু কার্ড নয়। এটি হচ্ছে বিখ্যাত জাহাজ আরএমএস টাইটানিকের নৈশভোজের মেনু কার্ড ।
মেনু কার্ডটিতে খাবারের তালিকার মধ্যে রয়েছে, অয়েস্টার, স্যামন, বিফ, স্কোয়াব, ডাক, চিকেন, পার্সনিপ পিউরি… শেষে আবার ভিক্টোরিয়া পুডিং! রাজকীয় সব খানাপিনা।
হবে না-ই বা কেন। পৃথিবীতে এত বড় জাহাজ আর কোথায় ছিল। সেই জাহাজের ফার্স্ট ক্লাসের ধনকুবের যাত্রীদের নৈশভোজের মেনু। কালের নিয়মে সাদা মেনুকার্ডে লালচে রঙ ধরেছে। তবে খাবারের নামগুলি পাঠযোগ্য রয়েছে। কার্ডের ডান দিকে লেখা, এপ্রিল ১১, ১৯১২! আর উপরে একটি লাল পতাকা, তার মাঝে সাদা তারা। এটি টাইটানিকের পতাকা।
টাইটানিকের বিভিন্ন জিনিস বহু মানুষের ব্যক্তিগত সংগ্রহ হিসেবে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলি কোনও সংগ্রহশালায় থাকা উচিত। কিছু জিনিস টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপ থেকে পাওয়া গিয়েছিল। কিছু ছিল ওই জাহাজ থেকে বেঁচে ফেরা যাত্রীদের কাছে। নিলামে ওঠা মেনু কার্ডটিও তেমন। তবে সেটি কার কাছে ছিল, কে জাহাজ থেকে নিয়ে এসেছিলেন, তা জানা যায়নি। সকলেই জানতে চান, লাইফবোটে ওঠার আগে কে ওই মেনু কার্ডটি তুলে এনেছিলেন ?
আরও একটি জিনিস নিয়ে জনমনে বেশ কৌতূহল এর সৃষ্টি করেছে। আর সেটি হল, ‘ভিক্টোরিয়া পুডিং’। ভোজের শেষে রাজকীয় মিষ্টিমুখের রেসিপিটি ঠিক কী? জানা গিয়েছে, ময়দা, ডিম, জ্যাম, ব্র্যান্ডি, আপেল, চেরি, চিনি ও নানা মশলা সহযোগে তৈরি ওই পুডিং। এ ছাড়াও সে দিন নৈশভোজের শেষ পাতে ছিল ফরাসি আইসক্রিম ও অ্যাপ্রিকট।
১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল উত্তর অতলান্তিক মহাসাগরে একটি প্রকাণ্ড হিমশৈলে ধাক্কা লাগে ফাটল ধরে টাইটানিকের। সে রাতেই ডুবে যায় টাইটানিক। প্রাণ হারিয়েছিলেন কমপক্ষে ১৫০০ জন। যাঁরা লাইফবোটে জায়গা করতে পেরেছিলেন, তাঁরা বেঁচেছিলেন। এমনই কোনও যাত্রী টাইটানিক ছাড়ার আগে হয়তো একটি মেনু কার্ড স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছিলেন। অন্য কোনও কাহিনি থাকলে ১১১ বছর পরে আজ তা রহস্য।