দেশনেত্র নিউজ ডেস্ক:
রাজধানী তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে বিক্ষোভ করেছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল থেকেই কলেজটির সামনে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এ সময় সদ্য ঘোষিত কমিটিকে অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়ে ক্যাম্পাসে শোডাউন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা না করা পর্যন্ত বর্তমান কমিটি ক্যাম্পাসে অবস্থান নিতে পারবে না বলে জানান বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা। এসময় নেতাকর্মীরা ‘বৈষম্যের কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘আমরা সবাই তারেক সেনা, ভয় করি না বুলেট বোমা’সহ নানান স্লোগান দিতে থাকেন।
পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মেশকাত হোসেন বলেন, সদ্য ৩২ সদস্যের যে কমিটি দেয়া হয়েছে এই কমিটিতে পাচঁ-সাতজন ছাড়া কাইকে তেমন চিনিও না। আমরা একটা সূত্র থেকে জানতে পারলাম প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে টাকা বিনিময়ে কমিটিতে জায়গা পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন,গত ২৮ অক্টোবরের পরে আমরা জীবনবাজি রেখে রাজপথে ছিলাম। রাজপথে থাকার পরে দলীয় যে নির্দেশনা দিয়েছে সব যথাযথভাবে পালন করেছি।
জুলাই গণ অভ্যুত্থানে দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে সাধারণ ছাত্রদের পাশে থেকে আমরা ফার্মগেইট এলাকায় আন্দোলন চালিয়ে যাই। দলের একটি খারাপ চক্র তারা দলের ভেতর দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টির জন্য অনেক পাঁয়তারা করে এবং দেখা যাচ্ছে তার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল একটা কমিটি হয়েছে।
তেজগাঁও কলেজ শাখার ৩২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে আহ্বায়ক পদ পেয়েছেন তরুণ মোর্শেদ, সদস্যসচিব সেলিম হোসেন। তরুণ মোর্শেদ ২০১৩ সালের পর থেকে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে ফার্মগেটের সেজান পয়েন্ট মার্কেটে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। সেলিম হোসেনও আন্দোলনের মাঠে নিয়মিত ছিলেন না। অথচ তেজগাঁও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন খান গুমসহ ১৮ মাস কারাগারে ছিলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে মিথ্যা হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি। অথচ তাকে কোনো পদে রাখা হয়নি। ছাত্রদল নেতা এইচএসসি পরীক্ষার্থী আশিকুর রহমানকে গত বছরের ২৮ অক্টোবরের পর অবরোধের মিছিল থেকে গ্রেপ্তার করা হলেও কমিটিতে তার স্থান হয়নি। এ ছাড়া সক্রিয় থাকা সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ রবিন, নাঈমুল ইসলাম নাজিম, মামুন মালতিয়া, নাজমুল হুদা রাকিব, মেশকাত হোসেন, নাহিদুল ইসলাম ব্যাপারী, আনোয়ার হোসেন রানা কাউকে রাখা হয়নি। তেজগাঁও কলেজ কমিটি বাতিলের দাবিতে ধারাবাহিক বিক্ষোভ মিছিল করছেন হামলা-মামলায় নির্যাতিত নেতা-কর্মীরা।
ছাত্রদলের শীর্ষ দুই নেতার উদ্দেশে কলেজ ছাত্রদল নেতাকর্মীরা জানান, আর কী করলে ত্যাগী হওয়া যায়? যারা ২৮ অক্টোবর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিল তারাই কী ত্যাগী? যারা রাজপথে জীবনবাজি রেখেছেন আন্দোলন করেছেন, কারাগারে গেছেন, গুমের শিকার হয়েছেন, রিমান্ডের নামে অকথ্য নির্যাতন সহ্য করেছেন তাদের স্থান কোথায় ?
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করে পছন্দসই ও অছাত্র ব্যক্তিদের দিয়ে পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের দাবি অনিয়মিত ও ছাত্রলীগের কর্মী নিয়ে কমিটি গঠন হয়েছে। এতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও বঞ্চনার সৃষ্টি হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা আরও দাবি করেন, পকেট কমিটি বাতিল করে ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অন্যথায়, তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।