সহিংসতা এড়াতে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে
সংগৃহীত ছবি

সহিংসতা এড়াতে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে আকাশ থেকে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্থলের পাশাপাশি আকাশের নিরাপত্তা যাতে অটুট থাকে সে জন্য তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় প্রচুর ড্রোনের ব্যবহার লক্ষ করেছে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্থাগুলো।

প্রচুর ড্রোন আকাশে ওড়ানোর কারণে ভোটারদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েন। ড্রোনগুলো অনেক নিচ দিয়ে ছবি সংগ্রহ করেছে। বিশেষ করে জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন থানা এলাকায় অনেক ভোটার ড্রোন দেখার জন্য ভোটকেন্দ্রের আশপাশে ভিড় জমান। পুলিশ সদস্যরা তাদের সেখান থেকে বারবার সরাতে চাইলেও অনেকেই সরেননি। ফলে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে। আবার অনেকেই প্রায় আধা কিলোমিটার দূর থেকে দূর নিয়ন্ত্রিত ড্রোন আকাশে উড়িয়েছেন। ক্যামেরার মাধ্যমে তারা দূর থেকে বসে ছবি নিয়েছে ভোটকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকার। এতে কে বা কারা কোন স্থান থেকে ড্রোন উড়িয়েছে তা তাৎক্ষণিক বুঝতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা । কিছু ড্রোন ধরার জন্য পুলিশ উদ্যোগ নিলেও তা ধরা যায়নি। কেননা, সেগুলো দ্রুত আবার সেখান থেকে চলে যায়।

নির্বাচনের দিন চলে যাওয়ার পর কারা ড্রোন উড়িয়েছে পুলিশ সেভাবে আর খোঁজখবর নেয়নি। তবে এবারের প্রেক্ষাপটে নতুন করে বিষয়টি তারা ভেবে দেখেছে। এ জন্য কেউ নির্বাচনে ড্রোন ব্যবহার করতে চাইলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের অনুমতি নিতে হবে। যদি কেউ অনুমতি না নিয়ে দূর থেকে ড্রোন ব্যবহার করে তাহলে তদন্ত করে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নির্বাচনের দিন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ড্রোন ওড়াতে হবে। ভোটকেন্দ্রে যারা ড্রোন ব্যবহার করবেন তাদের সেখানে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর অনুমোদন নিতে হবে।’

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (ম্যাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড পাবলিসিটি) মো. এনামুল হক সাগর বলেন, ‘ড্রোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধান রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ ড্রোন ব্যবহার করতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিতে হবে।’

পুলিশ ও র‌্যাব সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে পুলিশ ও র‌্যাব সদর দপ্তরে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠের সরেজমিন চিত্রের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে মাঠে দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকা নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে জোর তাগিদ দিয়েছে।

সূত্র জানায়, এ ছাড়া নাশকতা রোধে ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে কাউকে বড় ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। যথাযথ তল্লাশি করার পর তাদের ঢোকানো হবে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের সময় ভোটারের দেহ ইলেকট্রিক ডিভাইস দ্বারা পরীক্ষা করবে পুলিশ। যাতে কেউ নাশকতা করতে না পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে একটি গোষ্ঠী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়েছিল। এতে অনেকেই বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে। অনেকেই দ্রুত গুজবের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ যাতে ভোট নিয়ে গুজব ছড়াতে না পারে, সে জন্য নজর রাখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে বিষয়টি খেয়াল রাখার জন্য পুলিশ সদর দপ্তর ও র‌্যাব সদর দপ্তর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগে থেকে নজরদারি শুরু করেছে।

সূত্র জানায়, বিশেষ করে কিছু দুর্বৃত্ত ভুয়া পেজ খুলে নির্বাচন, সরকার ও সরকারের কিছু ব্যক্তির নামে কুৎসা ছড়াচ্ছে। সেই ভুয়া পেজগুলোকে শনাক্ত করার কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এই গুজব ঠেকাতে বিআরটিসির সঙ্গে সমন্বয় করবে পুলিশ সদর দপ্তরের সাইবার মনিটরিং সেল। ইতোমধ্যে দুই সংস্থার সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। নির্বাচনের আগে তারা হোমওয়ার্ক করেছেন বলে জানা গেছে।

এছাড়াও

গুজব–ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না: সেনাপ্রধান

গুজব-ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না: সেনাপ্রধান

দেশনেত্র ডেস্ক : সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যে দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *