পাঞ্জাবি-টুপি পরে মাস্কে মুখ ঢেকে পালিয়েছেন ডিবিসি নিউজের সিইও মঞ্জু

দেশনেত্র নিউজ ডেস্ক:

গণহত্যার উসকানিদাতা হিসেবে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে অবৈধভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ডিবিসি নিউজের সিইও এম মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে মঞ্জু। গত ১২ই সেপ্টেম্বর পালিয়ে যান তিনি।

সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেন মার্কিন পাসপোর্টধারী মঞ্জু। সিদ্ধান্ত নেন অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশের। সে-অনুযায়ী, ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে অনুপ্রবেশে মনস্থির করেন। উল্লেখ্য, মঞ্জুর শ্বশুর বাড়ি ময়মনসিংহে।

৯ই সেপ্টেম্বর ধোবাউড়া এলাকার ‘সীমান্ত পার করে দেয়া’ দালাল চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মঞ্জু। যাত্রার তারিখ চূড়ান্ত হয় ১২ই সেপ্টেম্বর। সেদিন সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে প্রাইভেট কারে চড়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হন একাধিক হত্যা ও গণহত্যা মামলার আসামি মঞ্জু।

ধোবাউড়া পৌঁছানোর পর প্রাইভেট কার থেকে নেমে মোটরসাইকেলে চড়ে সীমান্ত এলাকায় পৌঁছান মঞ্জু। এরপর তাকে শেষ রাতের দিকে সীমান্ত পার করে দেয় চক্রটি।

মঞ্জুকে সীমান্ত পার করে দেয়া দালাল চাক্রের এক সদস্য জানান, “উনাকে দেখেই আমি চিনে ফেলি। বললাম- আপনি ডিবিসির সিইও না! তখন উনি আমার হাত চেপে ধরেন। বলেন- এসব কথা বাদ দেন ভাই। আমাকে পার করে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। তখন খুবই নার্ভাস ছিলেন তিনি।”

ওই সদস্য জানান, “সীমান্ত পার হওয়ার সময় মঞ্জু সাহেবের পরনে ছিল সাদা রঙের পাঞ্জাবি। মাথায় ছিল টুপি। খোচা খোচা দাড়ি থাকা মুখ মাস্কে ঢাকা ছিল। সঙ্গে একটা ব্যাগ ছিল। খুবই সাদামাটা বেশে এসেছিলেন তিনি।”

আরও জানান, “আমি কয়েকবার ঢাকার মহাখালীতে আহসান টাওয়ারে ডিবিসি নিউজের অফিসে গিয়েছি। আমার এক আত্মীয় ওইখানকার সাংবাদিক এই সূত্রে। তখন উনাকে দেখেছি। এ কারণেই মঞ্জু সাহেবকে দেখেই চিনে ফেলি।”

মেঘালয়ে মঞ্জুকে রিসিভ করেন ঘুসখোর, যৌন নিপীড়ক, ডিবিসি নিউজ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়া প্রণব সাহার লোকজন। এরপর ভারতে দু-একদিন অবস্থান করে নেপাল হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান মঞ্জু। উল্লেখ্য, গণহত্যার উসকানিদাতা হিসেবে প্রণব সাহার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগের তদন্ত চলছে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ‘সাংবাদিকতার আড়ালে জাতীয় স্বার্থ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার’ অভিযোগে যে ৫১ সাংবাদিককে কর্মস্থল থেকে বহিষ্কার এবং সাংবাদিক অঙ্গনে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী অন্দোলনকারীরা, সেখানে মঞ্জু ও প্রণবের নামও ছিল।

জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় উসকানি দেয়ার অভিযোগে মঞ্জুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগের তদন্ত চলছে। এছাড়াও একাধিক হত্যা মামলার আসামি তিনি।

ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশের পর বিতর্কিত সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবুকে ফোন করেন মঞ্জু। জানান যে, “ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত নিরাপদ আছে। ওইদিক দিয়ে পার হতে পারেন।”

মঞ্জুর পরামর্শ মতো ওই পথ দিয়ে ভারতে পালানোর সময় গ্রেপ্তার হন মোজাম্মেল বাবু ও আরেক বিতর্কিত সাংবাদিক শ্যামল দত্ত।

দেশ ছেড়ে মঞ্জু পালিয়ে গেলেও তার পরামর্শমতো ডিবিসি নিউজ পরিচালনা করছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল আহসান। এরই ধারাবাহিকতায় যৌন নিপীড়ক ও দুর্নীতিবাজ প্রণব সাহাকে ফিরিয়ে আনতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন তিনি। এ নিয়ে টিভি স্টেশনটির মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

এছাড়াও

রাজধানীতে নারী সাংবাদিককে মারধর ও শ্লীলতাহানী, গ্রেপ্তার তিন

রাজধানীতে নারী সাংবাদিককে মারধর ও শ্লীলতাহানী, গ্রেপ্তার তিন

দেশনেত্র প্রতিবেদক : রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় এক নারী সাংবাদিককে হেনস্তার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *