একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের থার্টি ফার্স্ট নাইট এবং নববর্ষ পালন সম্পর্কে জানা একান্তই জরুরী। বর্তমানে আমরা মুসলিম হয়েও নিজের ধর্মীয় উৎসব , সংস্কৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় বিধর্মীদের উৎসব , সংস্কৃতি পালন করে নিজেদের ঈমানকে নষ্ট করে পরকালীন ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি ।
কিছু মুসলিমদের অবস্থা এমন যে, কেউ বলেছে “চিলে কান নিয়ে গেছে ” নিজের কান আছে নাকি না দেখে চিলের পিছু নেয়ার মতো । মুসলিম হয়েও যেকোন রীতিনীতি, কৃষ্টি -কালচার ইসলাম সমর্থন করে নাকি সেটা যাচাই বাছাই না করে অবলীলায় গ্রহন করছে ।
# ইসলামি দৃষ্টি কোন থেকে থার্টি ফার্স্ট নাইট এবং নববর্ষ পালন করা হারাম।
# দলিল : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন , যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করলো সে তাদেরেই অন্তর্ভুক্ত।
(আহমদ ,আবু দাউদ , মিশকাত)
# স্বভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় মুসলিরা নিজেরা সংস্কৃতি সহ সকল দিক দিয়ে স্বাবলম্বী থাকা সত্ত্বেও নিজেদের সংস্কৃতি পালন না করে অন্যের সংস্কৃতি পালন করা দৃষ্টিকটু ,নিন্দনীয় এবং বোকামি ছাড়া বৈ কিছু নয় ।
# থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস জেনে নিলে ইসলামে নিষিদ্ধ করার কারণটি স্পষ্ট হবে ।
ইতালির রাজধানী রোমে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের অন্তর্গত বছরের প্রথম দিনটি জানুস দেবতার নামে উৎসর্গ করা হতো। জানুস হলো প্রবেশপত্র বা সূচনার দেবতা ইংরেজিতে যাকে God of beggings বলে তারা মানত। তারা তাদের নিজেদের হাতে বানানো বিভিন্ন স্রষ্টার উপাসনা করত। জানুস তাদের মধ্যে অন্যতম। তাদের আকিদা ও বিশ্বাস ছিল জানুস দেবতা তাদের অতীত ভবিষ্যত সম্পর্কে জানে। এ জন্য জানুস দেবতার দুটি মাথা বানিয়েছিল। জানুয়ারি মাসের শুরুর রাত্রিতে তাঁরা দেবতাকে খুশি করার জন্য রাত্রিকে উৎযাপন করতো । তারা জানুস দেবতার পিছনের মাথার কাছে গিয়ে বলতো অতীতের পাপগুলো মুছে ফেলতে এবং ভবিষ্যতে তাদের কল্যাণ করার জন্য।
সেই সময় থেকে থার্টি ফার্স্ট নাইট এবং নববর্ষ পালন শুরু হয় । খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দে পারস্যের সম্রাট জামশিদ নববর্ষের প্রবর্তন করেন । পরবর্তীতে ব্যবিলনের সম্রাট জুলিয়াস সিজার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে ইংরেজি নববর্ষের প্রবর্তন করেন। বাংলাদেশ থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ব্যাপক প্রচলন ঘটে ২০০০ সালের ৩১ শে ডিসেম্বরের রাত উৎযাপনের মধ্যে দিয়ে।
কেউ যদি ইতিহাস জেনেও থার্টি ফার্স্ট নাইট এবং নববর্ষ পালন করে
তাহলে আল্লাহ তায়ালার সাথে অংশীদার স্থাপন করলো যার কারণে একজন মানুষ মুসলিম মিল্লাত থেকে বের হয়ে যায় । কারণ আল্লাহ তায়ালা প্রতেকটি প্রানীর অতীত ও ভবিষ্যতের কল্যাণকামী । নববর্ষ বা থার্টি নাইট ফাষ্ট পালন হতে পারে, লেখনীর মাধ্যমে , পোষ্ট করার মাধ্যমে , শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে বা নববর্ষের উপলক্ষে কোন আয়োজনের মাধ্যমে । আসুন আমরা নিজরা সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন করি । আল্লাহ তায়ালা সকলকে বুঝার তৌফিক দান করুক ( আমীন)
লেখক,
MD Al-amin
শিক্ষার্থী, দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।