চিত্রনায়িকা নিপুনকে জয়ী করতে হুমকি দেন শেখ সেলিম
ফাইল ছবি

চিত্রনায়িকা নিপুনকে জয়ী করতে হুমকি দেন শেখ সেলিম

দেশনেত্র নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েছেন নিপুন আক্তার। চিত্রনায়িকার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে অনেক আগে থেকেই। সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে ২০২২ সালে জল ঘোলা হয়েছে অনেক। সেবার সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রাথমিক ভোট গণনায় জয়ী হন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। কিন্তু ফলাফল মেনে নেননি সাধারণ সম্পাদক পদে পরাজিত প্রার্থী নিপুন। পরে আদালতের নির্দেশে শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসেন এই চিত্রনায়িকা। অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম নিপুনকে জয়ী করতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেন। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে আসতে থাকে চাপ। নিপুনের সঙ্গে সেলিমের বিশেষ সম্পর্কের বিষয়টি অনেকে জানলেও ভয়ে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেননি।

জানা যায়, সে বছর নির্বাচনের ফলাফলের রাতে ভোট গণনার শুরু থেকেই একের পর এক হুমকি পেতে থাকেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। একপর্যায়ে জায়েদ খানের চেয়ে ভোটে পিছিয়ে পড়েন নিপুন। তখন একের পর এক ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ভয়ভীতি দেখানো শুরু করেন কমিশনারকে।

ওই ঘটনার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালনকারী পীরজাদা হারুন জানান, ২০২২ সালের নির্বাচনে তার ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল। নির্বাচনে নিপুনকে জয়ী দেখাতে একজন ক্ষমতাবান রাজনীতিবিদ একের পর এক ফোন করতে থাকেন।

মুঠোফোনে ভয় দেখানোর পাশাপাশি বড় অঙ্কের অর্থের লোভও দেখানো হয় উল্লেখ করে হারুন বলেন, ‘ফোনে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখানো হয়। পরে একটি জায়গায় যেতে বলা হয়, যেখানে অনেক টাকা রাখা ছিল। যখন রাজি হলাম না, তখন ফলাফল নিয়ে মামলা হলো। সেটা গেল কোর্টে। তখনও নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আমাকে একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য বানিয়ে নানা কাণ্ডে ছোট করা হলো, নিষিদ্ধ করা হলো এফডিসিতে।

শিল্পী সমিতির সেই নির্বাচনে কমিশনের সঙ্গে যুক্ত আরেক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে জানান, ‘নির্বাচন কমিশনারদের একের পর এক ভয়ভীতি দেখিয়ে গালিগালাজ করা হয়। পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, এমন লেভেল থেকে ফোন আসবে, ভাবতে পারিনি। নিপুনকে জয়ী করাতে আমাদের একেকজনকে ১৭ বার ফোন করেন শেখ সেলিম সাহেব। এটা আমাদের অবাক করেছিল।’

এরপর ঘটনা মামলায় গড়ায়। আদালত থেকে রায় নিয়ে শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসেন চিত্রনায়িকা নিপুন। এর দুই বছর পর ২০২৪-২৬ সালের নির্বাচনে হেরে যান নিপুন। সভাপতি পদে জয়ী হন মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ডিপজল। হেরে যাওয়ার পরও কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার করে গত জুলাইয়ে বিবৃতি দেন এই চিত্রনায়িকা। কিন্তু এটা তিনি সাংগঠনিক নিয়মে করতে পারেন না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

নিপুনের বিবৃতিতে লেখা ছিল, ‘কোটা আন্দোলনকে ইস্যু করে যারা মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করছেন এবং রাজাকারদের প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন, তাদের প্রতি তীব্র নিন্দা, ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই বিবৃতি নিয়ে শিল্পীরা নিপুনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন।

বর্তমানে প্রশ্ন উঠেছে, নিপুনের সঙ্গে শেখ ফজলুল করিম সেলিমের পরিচয় হলো কীভাবে। জানা যায়, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে রাজনৈতিক অঙ্গনে এই নায়িকার আনাগোনা বাড়তে থাকে। সে সময়ই তাদের পরিচয়।

২০১২ সালে বনানীতে নিপুন গড়ে তোলেন নিজস্ব পারলার। সেটি উদ্বোধন করতে যান শেখ সেলিম। সেই থেকে আলোচনায় আসেন নিপুন। এসব বিষয়ে গণমাধ্যম নিপুনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু নায়িকার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এছাড়াও

রাজধানীতে নারী সাংবাদিককে মারধর ও শ্লীলতাহানী, গ্রেপ্তার তিন

রাজধানীতে নারী সাংবাদিককে মারধর ও শ্লীলতাহানী, গ্রেপ্তার তিন

দেশনেত্র প্রতিবেদক : রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় এক নারী সাংবাদিককে হেনস্তার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *