দেশনেত্র ডেস্ক :
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেড। নৌবাহিনী নিয়ন্ত্রিত এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত সামরিক জাহাজ মেরামতের কাজ করে। রোববার (৬ জুলাই) মধ্যরাত থেকে তারা এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন অপারেটর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ড্রাইডক এই টার্মিনাল পরিচালনা করবে।
সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ড্রাইডককে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে এনসিটি পরিচালনা করছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। রোববার তাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেসরকারি অপারেটরের চুক্তি বাড়ানোর পক্ষে ছিল না। বরং তারা বিদেশি অপারেটর নিয়োগের কথা বিবেচনা করছিল। এ ক্ষেত্রে দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডের নাম আলোচনায় আসে। তবে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন নৌবাহিনীকে এ দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তি শেষ হওয়ায় এখন থেকে ড্রাইডক এনসিটি পরিচালনা করবে। আগের মতোই সব কর্মী ও কার্যক্রম চলবে, শুধু ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন হয়েছে। তিনি জানান, শিগগিরই আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কন্টেইনার টার্মিনালের মধ্যে সবচেয়ে বড় এনসিটি। এখানে পাঁচটি জেটি রয়েছে, যার চারটিতে বড় কন্টেইনার জাহাজ ও একটিতে ছোট নৌযান ভেড়ে। বন্দরের মোট কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ৪৪ শতাংশই হয় এই টার্মিনালে। ২০০৭ সালে নির্মাণ শেষ হওয়া এনসিটির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় ৪৬৯ কোটি টাকা ব্যয় করে।
২০১৫ সালে সাইফ পাওয়ারটেক প্রথম এনসিটির কিছু জেটি পরিচালনার দায়িত্ব পায়। পরে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে তাদের চুক্তি বারবার বাড়ানো হয়। গত জানুয়ারিতে ১২তম বারের মতো ছয় মাসের চুক্তি পায় প্রতিষ্ঠানটি। এনসিটি পরিচালনায় বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কিনতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকেই এনসিটি বিদেশি অপারেটরের কাছে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ডিপি ওয়ার্ল্ডকে এ দায়িত্ব দেয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন মহলের বিরোধিতার মুখে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এখন ড্রাইডক প্রাথমিকভাবে ছয় মাস বা নতুন অপারেটর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এনসিটি পরিচালনা করবে।