বগুড়া প্রতিনিধি :
বগুড়ার এক পাষণ্ড বাবা তার ১৪ মাস বয়সী কন্যাসন্তানকে ঘুমন্ত অবস্থায় পুকুরে ছুড়ে ফেলেছেন।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে পুকুর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে মরদেহ এবং শিশুটির বাবা জাকিরকে পুলিশে দেন তারা। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের উঁচুলবাড়িয়া গ্রামের এ ঘটনা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জাকির-রাবেয়ার বিয়ের পর প্রথম সন্তান ‘মেয়ে’ হয়। কিন্তু কন্যাসন্তানে বাবা জাকির নাখোশ। প্রত্যাশা ছিল, দ্বিতীয় সন্তান ‘ছেলে’ হবে। কিন্তু সে আশাও পূরণ হয়নি জাকিরের। দ্বিতীয়ও সন্তানও ‘মেয়ে’। স্ত্রী রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে মেয়ে শিশু জন্মদান নিয়ে লেগেই থাকতো ঝগড়া, মনোমালিন্য।
একই কারণে সোমবার সন্ধ্যায় তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। পরবর্তীতে রাতের কোনো একসময় ঘুমন্ত শিশুটিকে পুকুরে ফেলে দেন জাকির।
বিলাপ করতে করতে জাকিরের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘মধ্যরাতে ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার মেয়ে খাটের ওপর নাই। পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে বিষয়টি জানাই। একইসঙ্গে আমার বোন-দুলাভাইকে খবর দিই। প্রতিবেশীদেরও জানানো হয়। সবাই এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সন্তানকে না পেয়ে একাধিকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। একপর্যায়ে আমার স্বামীকে চাপ দেন তারা। পরে আমার মেয়েটিকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।’
জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠাই। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
জাকির জানিয়েছে, হঠাৎ মাথা গরম হয়ে যাওয়ায় এমন কাজটি করেছেন তিনি। ঘটনার পর এখন নিজের ভুল বুঝতে পারছেন। এ জন্য তিনি অনুতপ্ত। সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি জানান, তার মতো এ ধরনের কাজ যেন আর কেউ না করে।